Monday, July 14, 2008

ব্রিজিত বারদো’র


ফরাসি অভিনেত্রী, সাবেক সুপার মডেল, গায়িকা এবং পশুপ্রেমী ব্রিজিত বারদোকে নিয়ে খবরের শেষ নেই। ১৯৩৪ সালের ২৮শে সেপ্টেম্বর তিনি ফ্রান্সে জন্মগ্রহণ করেন। কিশোরী বয়স থেকেই তিনি চলচ্চিত্র জগৎকে তার রূপের বানে ভাসিয়ে দিয়েছেন। অসংখ্য পুরুষ তার পেছনে ঘুরেছেন। ঘটিয়েছেন নানা রসালো কাহিনী। এখন তার বয়স ৭৩ বছর। এখনও সেলিব্রেটিদের নিয়ে কথা ওঠলেই তার নাম চলে আসে। এখনও তিনি হন সংবাদ শিরোনাম। সম্প্রতি তিনি সংবাদ শিরোনাম হয়েছিলেন একটু অন্য কারণে। তাকে প্যারিসের এক আদালত ২৩ হাজার ডলার জরিমানা করেছে। কারণ এখন তিনি পশুপ্রেমী। পশুর কল্যাণে কাজ করেন। এজন্য ২০০৬ সালে ব্রিজিত বারদো তখনকার ফরাসি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, বর্তমান প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজিকে একখানা চিঠি লিখেছিলেন। তাতে মুসলমানরা যেভাবে পশু জবাই করে তা নিয়ে তিনি সমালোচনা করেছিলেন। পশু জবাই করার আগে একটি পন্থা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছিলেন ব্রিজিত বারদো। এ নিয়ে আদালতে মামলা হয়। সেই মামলার রায় হয় মঙ্গলবার। তাতে ব্রিজিত বার্দোতকে দোষী সাব্যস্ত করে তাকে ওই জরিমানা করা হয়। ওইদিন আদালতে ব্রিজিত বার্দোত হাজির না হলেও তিনি একখানা কাগজে আদালতের কাছে পত্র লিখে পাঠান। তাতে বলেন, তিনি আগের অবস্থান থেকে সরে আসবেন না। তার এ বক্তব্য নিয়ে এখনও ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। অনেকে বলছেন, ব্রিজিত বারদো যৌবনে যেমন মিডিয়াকে মাতিয়ে রাখতেন এখনও একই কাজ করার চেষ্টা করছেন। তবে তা একটু ভিন্ন উপায়ে। ব্রিজিত বারদোকে যারা জানেন তারা তাকে সেক্সসিম্বল হিসেবে বেশি চিনে থাকেন। ব্রিজিত বারদো মাত্র ১৮ বছর বয়সে ১৯৫২ সালের ২১শে ডিসেম্বর চলচ্চিত্র পরিচালক রজার ভাদিমকে বিয়ে করেন কয়েক বছরের প্রেম করে। তার আগে থেকে তিনি আলোচনায় থাকলেও ওই সময় আলোচনা ডালপালা বিস্তার করে। তবে ওই বিয়েতে সায় দিচ্ছিলেন না ব্রিজিতের মা-বাবা। এ কারণে রজার ভাদিম ধর্মান্তরিত হন। কিন্তু এত প্রেম-ভালবাসার বিয়ে টেকসই হয়নি। মাত্র পাঁচ বছর পরেই ভেঙে যায় তাদের বিয়ে। বিয়ে ভেঙে গেলেও তারা দু’জন ছিলেন বন্ধু এবং একে অন্যকে সহায়তা করেছেন। এসময় নানা কথা বলাবলি হয়েছিল। তবে মজার ঘটনা হলো ফরাসি অভিনেত্রী স্টিফানি অড্রানের স্বামী এন্ড গড ক্রিয়েটেড উমেন ছবির সহঅভিনেতা জ্যাঁ রুইস ট্রিটিগন্যান্ট-এর সঙ্গেও তিনি প্রেম চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তারা বিবাহ ছাড়াই একত্রে বসবাস করেছেন দুই বছর। ট্রিটিগন্যান্ট সামরিক বাহিনীতে চাকরি করতেন। তিনি চাকরিতে চলে যাওয়ার পর সে সম্পর্ক আর টেকেনি। ব্রিজিত বারদো নতুন প্রেম গড়ে তোলেন মিউজিশিয়ান গিলবার্ট বিকডের সঙ্গে। সে সম্পর্কও শুরুর পর পরই শেষ হয়ে যায়। ১৯৫৮ সালের ৯ই ফেব্রুয়ারি লস অ্যানজেলেস টাইমস তার প্রথম পৃষ্ঠায় রিপোর্ট করে, ব্রিজিত বারদো তার ভগ্ন মানসিক অবস্থা থেকে সুস্থ হয়ে উঠছেন। এর দুইদিন আগে জনসম্পর্ক বা প্রচার বিষয়ক ম্যানেজার তার সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে রাজি না হওয়ায় ব্রিজিত ইতালিতে ঘুমের বড়ি খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। ১৯৫৯ সালের ১৮ই জুন ব্রিজিত বিয়ে করেন অভিনেতা জ্যাক চারিয়েরকে। তার ঔরসে ব্রিজিত একমাত্র ছেলে নিকোলাস জ্যাকস চ্যারিয়েরের মা হন। সে ১৯৬০ সালের ১১ই জানুয়ারির কথা। ব্রিজিত বারদোর কাছে ওই সন্তানসম্ভবা হওয়াটা ছিল অপ্রত্যাশিত। তিনি প্রথমদিকে মনে করেছিলেন তার পেটে টিউমার। কিন্তু শেষ পর্যন্তু দেখা যায় তিনি অন্তঃসত্ত্বা। জ্যাক চ্যারিয়েরের সঙ্গে ১৯৬২ সালে বিচ্ছেদ ঘটে ব্রিজিতের। কিন্তু ছেলে নিকোলাস তার পিতার সংসারে লালিত পালিত হতে থাকেন। ব্রিজিত বারদোর আরেক স্বামী জার্মানির মিলিয়নিয়ার গান্টার স্যাচ। সর্বশেষ স্বামী বার্নার্ড ডি’ওরমাল এখনও তার সঙ্গে বন্ধনে আবদ্ধ আছেন।

No comments: